কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের স্নানোৎসবকে ঘিরে ৩ দিন যাবত মহাবারুনী মেলা, লাখ লাখ মতুয়াভক্তের সমাগম

গোপালগঞ্জ:
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ১১ বছরের ঐতিহ্যবাহী স্নানোৎসব তিন দিনব্যাপী শুরু হয়েছে মহাবারুনী মেলা। গত দুই বছর করোনার কারণে উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বছর বিরামহীন ভাবে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত চলবে মেলা পূন্যার্থীদের স্নান উৎসব। লাখ লাখ মতুয়াভক্ত হরিচাঁদ ঠাকুরের ভক্তরা এখানে স্নান করেন মনের বাসনা পুরনের জন্য।

১১ বছর আগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি গ্রামে জন্মেছিলেন শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর। ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপীয় ত্রয়োদশী তিথিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাই প্রতিবছরই দেশের সবচেয়ে বড় স্নানোৎসব হয় কাশিয়ানীর ওড়াকান্দি গ্রামে। ঠাকুর বাড়ির পাশে ৬০ একর জায়গাজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় বারুনি মেলা। এই উৎসবে প্রতিবছরই যোগ দেন দেশ বিদেশের কয়েক লাখ মতুয়া ভক্ত

গত দুই বছর করোনার কারণে উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে গত বছরের ২৭ মার্চ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঠাকুর বাড়িতে এসে পূঁজা অর্চনা করেছিলেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ির নাম বিশ্বজুড়ে আরও ছড়িয়ে পড়েছে। শ্রীশ্রী হারিচাঁদ ঠাকুরের ১১ তম জন্ম তিথি উপলক্ষে এবারের স্নানোৎসবে লাখ লাখ মতুয়া ভক্তের সমাগম ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় শ্রীধাম ওড়াকান্দির প্রধান ঠাকুর হরিচাঁদ ঠাকুরের উত্তরসূরী শচিপতি ঠাকুর হেমাংশুপতি ঠাকুর এবং স্নানোৎসব কমিটির সভাপতি দেবব্রত ঠাকুর বাপ্পী এই স্নানোৎসবের উদ্ধোধন করেন।

এরপর বিরামহীন ভাবে ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত পূন্যার্থীদের স্নানোৎসব চলবে মহাবারুনী মেলাও। মেলায় কুটির শিল্পের সামগ্রী, বিভিন্ন খেলনা, মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বাঁশের শিল্প, তালপাখা, মিষ্টিমন্ডা, খাদ্য সামগ্রী, নাগরদোলা ছাড়াও শিশুদের বিনোদনের জন্য আছে আরও নানা আয়োজন।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাক ঢোল, মৃদাঙ্গ, খঞ্জনী বাজিয়ে লাল নিশান নিয়ে হরি বল হরি বল ধ্বনি দিতে দিতে হরিচাঁদের ভক্তরা উৎসবে যোগ দিচ্ছেন শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে। ছাড়া বাস, ট্রাক, নসিমন, করিমন, ইজিবাইক, থ্রিহুইলার নৌপথে নৌকা ট্রলারে করেও মতুয়াভক্তরা আসেন।

গোপালগঞ্জের পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল, মাদারীপুর, ফরিদপুর, শরীয়াতপুর, রাজবাড়ী, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ভারত, নেপাল এবং শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশের মতুয়া ভক্তরা স্নানোৎসবে যোগ দিয়েছেন। ভক্তরা স্নান করে তাদের পাপ মোচন মানসকামনা পূর্ণসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি লাভের জন্য প্রার্থনা করেন

স্নানোৎসবকে ঘিরে জেলা পুলিশের থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো ঠাকুরবাড়ি তার আশপাশ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।এছাড়া স্বাস্থ্য সেবায় রয়েছে জরুরী এ্যাম্বুলেন্স, কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবীর কয়েকটি টিম

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*